
রংপুর রাইডার্স: গ্লোবাল সুপার লিগে ইতিহাস গড়ে সাড়ে ৬ কোটি টাকার প্রাপ্তি
Photo: Rangpur Riders Official Facebook Page
বাংলাদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এক নতুন ইতিহাস রচনা করেছে রংপুর রাইডার্স। ক্যারিবীয় দ্বীপ গায়ানায় অনুষ্ঠিত গ্লোবাল সুপার লিগ-এর প্রথম আসরেই তারা চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রাইজমানি হিসেবে সাড়ে ৬ কোটি টাকার বেশি অর্জন করেছে। সৌম্য সরকার ও স্টিভেন টেলরের ব্যাটিং ঝড়, সঙ্গে বোলারদের দারুণ পারফরম্যান্স পুরো দলের সাফল্যকে পূর্ণতা দিয়েছে।
গ্লোবাল সুপার লিগে রংপুর রাইডার্সের সাফল্য
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) একাধিকবার অংশ নিলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এবারই প্রথম রংপুর রাইডার্স বড় কোনো লিগে চ্যাম্পিয়ন হলো। স্বাস্থ্য ও খেলাধুলা সম্পর্কিত ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে তারা ক্রীড়াঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এই টুর্নামেন্টে রংপুর রাইডার্স মোট ৫ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৬ কোটি টাকা) মূল পুরস্কার পেয়েছে। এছাড়া লিগ পর্যায়ে দুটি ম্যাচ জেতার জন্য পেয়েছে আরও ৫০ হাজার ডলার। সব মিলিয়ে তাদের মোট প্রাপ্তি দাঁড়ায় প্রায় ৬.৫ কোটি টাকার বেশি।
ফাইনালের গল্প: সৌম্য-স্টিভেনের ব্যাটিং জাদু
ফাইনালে রংপুরের প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়ার ফ্র্যাঞ্চাইজি দল ভিক্টোরিয়া। ব্যাট হাতে সৌম্য সরকার ঝড় তোলেন—৫৪ বলে ৮৬ রানে ৭টি চার ও ৫টি ছক্কা। স্টিভেন টেলর করেন ৪৯ বলে ৬৮ রান। এই পার্টনারশিপেই দলটি ১৭৮ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে, যা গ্লোবাল সুপার লিগে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর।
এই ম্যাচের বিস্তারিত দেখতে পারেন প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি।
বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স
রংপুর রাইডার্সের বোলাররা এই জয়ের পেছনে মূল ভূমিকা রাখে। হারমিত সিং ৩টি উইকেট তুলে নেন, পাশাপাশি শেখ মেহেদী, রিশাদ হোসেন ও সাইফ হাসান মিলে আরও ৬ উইকেট নেন। ফলে ভিক্টোরিয়া দল অলআউট হয় মাত্র ১২২ রানে।
এই জয় কেবল একটি দলীয় সাফল্য নয়, বরং বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নয়নের এক প্রতীকী মাইলফলকও বটে।
সৌম্য সরকারের অসাধারণ পারফরম্যান্স
পুরো লিগ জুড়ে সৌম্য সরকার ছিলেন রংপুর রাইডার্সের সাফল্যের কেন্দ্রবিন্দু। ফাইনালের ইনিংসের সুবাদে তিনি ‘প্লেয়ার অব দ্য ফাইনাল’ এবং ‘প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট’-এর দুটি পুরস্কারই পান।
এটি তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের জন্য বড় এক মঞ্চ তৈরি করেছে, যেভাবে খেলোয়াড়দের মানসিক দৃঢ়তা গড়ে তোলা হয়।
রংপুর রাইডার্সের নতুন যুগ
২০১৭ সালে বিপিএল চ্যাম্পিয়ন হয় রংপুর রেঞ্জার্স নামে দলটি। ২০২৩ সালে বসুন্ধরা গ্রুপ অধিগ্রহণের পর নতুন নামে “রংপুর রাইডার্স” হিসেবে যাত্রা শুরু করে। এই পুনর্জন্মের ফলস্বরূপ দলটি আজ আন্তর্জাতিক সাফল্যের স্বাদ পাচ্ছে।
তাদের সাফল্যের আরও বিশদ জানতে পড়ুন জাগো নিউজের প্রতিবেদন।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন দিগন্ত
রংপুর রাইডার্সের এই জয়ের ফলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে আন্তর্জাতিক ফ্র্যাঞ্চাইজি অংশগ্রহণের নতুন দিগন্ত খুলেছে। তরুণ ক্রিকেটাররা এখন আরও আত্মবিশ্বাসী এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আগ্রহী হবে।
যেভাবে সঠিক প্রস্তুতি ও অধ্যবসায় যে কোনো লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করে, রংপুর রাইডার্স তার নিখুঁত উদাহরণ।
ভবিষ্যতের প্রভাব ও উপসংহার
রংপুর রাইডার্সের সাফল্য অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর জন্যও এক অনুপ্রেরণার উৎস। সঠিক পরিকল্পনা, টিমওয়ার্ক ও মানসিক শক্তির মাধ্যমে যে কোনো দল আন্তর্জাতিক সাফল্য অর্জন করতে পারে—এটাই প্রমাণ করেছে রংপুর।
বিস্তারিত জানতে পড়ুন বণিক বার্তার পূর্ণ প্রতিবেদন।
তাদের এই অর্জন বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বিশ্ব মঞ্চে আরও দৃঢ়ভাবে উপস্থাপন করবে। এক কথায়, গ্লোবাল সুপার লিগে রংপুর রাইডার্সের জয় বাংলাদেশের জন্য গর্বের অধ্যায়।
রংপুর রাইডার্সের শিরোপা উদযাপন (Image Source: Official Page)