বাংলাদেশে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প: আজকের ঘটনা ও ভবিষ্যতের ঝুঁকি

২১ নভেম্বর ২০২৫ সকালে বাংলাদেশে একটি মারাত্মক ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল নরসিংদির মাধাবদী-তে। এই কম্পনটি মাত্রার হিসেবে ছিল ৫.৭ মাত্রা—যার কারণে ঢাকাসহ আশেপাশের এলাকা ব্যাপকভাবে দুলেছে। সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী অন্তত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছে, এবং শতাধিক আহত হয়েছে। 0

কি খবর বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূ-তত্ত্ব ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে, এই ভূমিকম্প এক ধরনের “ফোরশক” (foreshock) হতে পারে। কোথাও বড় সামনের ভূমিকম্পের সম্ভাবনা রয়েছে। 1

BUET-এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারি বলেন, ঢাকার বেশিরভাগ পুরাতন ভবন ভূমিকম্প-প্রতিরোধী নকশা অনুসরণ করে তৈরি নয়। 2

ঢাকার ভবনের অবস্থা এবং ঝুঁকি

ঢাকাট্রিবিউন জানাচ্ছে যে কম্পনের সময় বেশ কিছু পুরাতন বা নকশাগতভাবে দুর্বল ভবনে দৃষ্টিগোচর ফাটল দেখা দিয়েছে। 3
এই ধরনের ঘটনা স্পষ্ট করে দেয় যে শুধু কম্পনই নয় — ভবন নির্মাণ বিষয়েও এখন সময়োপযোগী বিশ্লেষণ ও সংস্কার জরুরি।

সতর্কতা ও পরবর্তী পদক্ষেপ

• সরকারি এবং স্থানীয় প্রশাসনকে ভবন কোড নিশ্চিত করা এবং পুরাতন ভবনগুলোর নিরাপত্তা মূল্যায়ন করতে হবে। 4
• নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি — ভূমিকম্প হলে কী করবেন, এবং জরুরি প্রস্তুতি নিতে পারা উচিত।
• দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রाधिकরণ(DDM) বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রস্তুত থাকতে বলছে বিশেষজ্ঞরা।

নিরাপদ থাকার কিছু প্রাকটিক্যাল পরামর্শ

যদি ভবিষ্যতে আবার ভূমিকম্প হয়, তাহলে কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ আছে যা প্রতিটি মানুষ অনুসরণ করতে পারে:

1. নিরাপদ জায়গা চিনে রাখুন: ঘরের ভিতরে টেবিল বা মেঝি-পিছনের স্থান নির্বাচন করুন যেখানে আল্প-ঝুঁকি আছে।
2. জরুরি কিট প্রস্তুত রাখুন: ফ্ল্যাশলাইট, ওয়াটার বোতল, প্রাথমিক চিকিৎসার সামগ্রী এবং যোগাযোগের একটি ব্যাকআপ।
3. পরিবারকে “ড্রপ-কভার-হোল্ড” কৌশল শেখান: এটি ভূমিকম্পে দ্রুত প্রতিক্রিয়া করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
4. বিল্ডিং স্ট্রাকচার পরীক্ষা করান: পুরাতন ভবনগুলোতে একটি স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার নিয়ে গিয়ে ফাটল বা দুর্বলতা বিশ্লেষণ করান।
5. মিডিয়া ও সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করুন: ভূমিকম্পের পরে আধিকারিক ঘোষণা এবং সেফটি নির্দেশিকা মেনে চলা দরকার।

ভবিষ্যতের ঝুঁকি বিশ্লেষণ

বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে গত কয়েক দশকে এমন বড় ভূমিকম্প খুব কম দেখা গেছে — কিন্তু এই ধরনের কম্পন একটি হুমকি দিতে পারে, যদি বড় মাপের বৈপ্লবিক ঘটনা আসে। 5

দীর্ঘমেয়াদে, বাংলাদেশের নগর পরিকল্পনায় ভূমিকম্প-প্রতিরোধী ডিজাইন এবং সিভিল নির্মাণের গুণগত মান উন্নতি একান্ত প্রয়োজন।

সাম্প্রতিক ঘটনা এবং মানুষিক প্রতিক্রিয়া

গত বৃহস্পতিবার কম্পনের সময় ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকা রাস্তা-পথে মানুষ বেরিয়ে আসে, ওয়ার্কপ্লেসে কর্মীরা প্যানিকে ছুটে যায়। 6
এটি একটি স্মরণ করিয়ে দিল যে প্রতিটি নাগরিকের জন্য প্রস্তুতি এখন আর বিলম্ব করতে পারবে না।

সংশ্লিষ্ট পোস্ট ও আরও পড়া

আপনি আগে আমার ব্লগে পড়েছেন — ভূমিকম্পে নিরাপদ থাকার কৌশল। সেখানে আপনি আরও গভীরভাবে জানতে পারেন কীভাবে সচেতনতা এবং প্রস্তুতি আপনার ও আপনার পরিবারকে রক্ষা করতে পারে।

এছাড়া, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে জানার জন্য আপনি Dhaka Tribune এর প্রতিবেদনটি দেখতে পারেন। 7

শেষ কথা

২০২৫ সালের ২১ নভেম্বরের ভূমিকম্প বাংলাদেশের জন্য একটি ভয়ঙ্কর স্মরণ করিয়ে দিল যে আমাদের নিরাপত্তা এখন আর গ্যারান্টিকৃত নয়। তবে সচেতনতা, পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি দিয়ে আমাদের জীবন এবং সম্পদ রক্ষা সম্ভব। প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব হলো নিরাপদ থাকার কৌশল শিখা, প্রস্তুত থাকা এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া।